পৃষ্ঠাসমূহ

Sunday, April 14, 2013

স্বাধীন দেশে থেকেও আজ আমরা পরাধীনতার চেয়েও অধম... একে কি স্বাধীনতা বলে?



আমরা বাঙ্গালী। এই কথাটি গর্ভ করে বলার ছিল। ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশ স্বাধীন হয়। মানলাম একটা দেশ যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হলে সে দেশ সবকিছু গুছিয়ে উঠতে কিছুটা সময় লাগে। তারপর তো সবকিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর এই দিনে এসে আজ আমরা কি দিখছি। দেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে কোন অবস্থাতেই বলা চলে না আমরা স্বাধীন জাতি। আমরা মুসলিম হয়ে দেশে আজ দাঁড়ি রাখতে পারি না। দাঁড়ি দেখলে পুলিশ পাকড়াও করছে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী বলে। আমরা হিন্দু হয়ে মাথায় সিন্দুর কিংবা ধুতি পরে ঘর থেকে বের হতে পারি না। আমরা সংখ্যালঘু বলে আমাদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে চোরাগুপ্তভাবে। কারণ আমরা এদেশে সংখ্যালঘু বলে। আসলে এদেশটা মুসলিম প্রধান দেশ। কিন্তু হিন্দু বলেন, বিধর্মী বলেন, খ্রিষ্টান বলেন, বৌদ্ধ বলেন আর মুসলিম বলেন সবার সৃষ্টিকর্তা তো এক আল্লাহই। আল্লাহকে যদি এক মানা হয় তাহলে কেন এই হিংসা-বিদ্বেষ। একজন মুসলিম হয়ে অন্য ধর্মের লোকদের ঘৃণা করা মানে কিন্তু খুব খারাপ। আজ আমরা ধরতে গেলে পুরোপুরি পথভ্রষ্ট। আর এই পথভ্রষ্টের কারণেই আমাদের এই দুর্গতি। স্বাধীন দেশে থেকেও হিংসা-বিদ্বেষ এর কারণে আজ একজন আরেকজনের আক্রমণের শিকার হচ্ছি প্রতিনিয়ত। স্বাধীন দেশে থেকে স্বাধীনতা কি জিনিষ আমরা ভুলে গেছি। এখন পরিস্থিত এমন যে দেশে যখন যে সরকার আসে তারাও ক্ষমতার অপব্যবহার করতে শুরু করেছে। সংবিধান থেকেও নাই বলে মনে করতে হচ্ছে। হরতাল, অবরোধ কিংবা যেকোনো প্রকারের দাবী নিয়ে আন্দোলন সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু আজকাল হরতাল কিংবা কোন আন্দোলনের ডাক দিলে সরকারের তরফ থেকেই নেওয়া হয় আন্দোলন প্রতিহত করার ব্যবস্থা। এতে করে সহিংসতা দেশে দিনের পর দিন বাড়তেই চলেছে। ক্ষতি হচ্ছে প্রতিনিয়ত আমাদের মত সাধারণ মানুষের। সরকার বলেন আর বিরোধী দল বলেন অথবা আন্দোলনকারী দল বলেন সবাই থাকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এতে দেখা যায় যে, সরকারের প্রতিহতের মুখে আন্দোলনকারীর কোন কর্মী কিংবা কোন সাধারণ মানুষের ছোট-বড় যে রকমই হোক কোন ক্ষতি হলেই প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে ঝাপিয়ে পড়ে আন্দোলনকারীরা অন্যের উপর। তারা আরো কয়েকজনের ক্ষতি করে দেয়। পাল্টা জবাবে ক্ষতিগ্রস্থ দল আবার দলবল নিয়ে চালায় আক্রমণ। এটাই আমাদের আজকের স্বাধীনতা। এ দেশের আইন-শৃঙ্খলার এতই অবনতি ঘটছে যে, এখন মানুষ খুন করা তেমন কোন বড় অন্যায় ও না। শুধু একটি রাজনৈতিক দলের ছায়াতলে থাকতে পারলেই হয়। এটাই আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা।

আমরা নতুন প্রজন্মের দাবী এ রকম স্বাধীনতা আমরা চাই না। আমরা চাই শান্তি। আমরা চাই দেশে যত রাজনৈতিক দল আছে তারা যেন সুষ্ট রাজনীতিতে ফিরে আসে। তারা যেন সহিংতার পথ ছেড়ে দেয়। আমরা এ দেশটাকে শান্ত-সৃষ্ট দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে পেশ করতে চায়। দাঙ্গাবাজ হিসেবে নয়। আমরা যেন আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে নিয়ে গর্ভ করতে পারি।.....

বাংলাদেশের নাম এই ভূ-খন্ডে কেয়ামতের আগেরদিন পর্যন্ত থাক সেই কামনাই করি।

No comments: