পৃষ্ঠাসমূহ

Friday, May 10, 2013

৬মে বাংলাদেশে আরেকটি অভ্যুত্থান ঘটানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল


বিগত ৪মে শাপলা চত্তরে প্রাত্তন প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা তাদের দলীয় সভায় বর্তমান সরকারকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন। পরেরদিন একই জায়গায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ ঢাকা অবরোধ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হেফাজতে ইসলামীর নেতা কর্মীরা। তাদের শাপলা চত্তরে সমাবেশ করার অনুমতিও প্রদান করা হয়। কিন্তু বিকাল ৫ টার পর থেকে তাদের হঠাৎ করেই ইচ্ছের পরিবর্তন ঘটে।
তারা সেখানে অবস্থান নেওয়ার কর্মসূচী ঘোষনা করেন। সন্ধ্যা হতে না হতেই শুরু হয়ে যায় জ্বালাও পোড়াও, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, দোকান পাটে আগুন, গাড়ী ভাংচুর ইত্যাদি কার্যক্রম। মূলত এইসব কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে শুধুমাত্র হেফাজতে ইসলাম ছিল না। দেশে একটা আতঙ্ক সৃষ্ট করার লক্ষ্যে সেখানে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উপস্থিত ছিল ছাত্রদল, যুবদল, বি.এন.পি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা কর্মীরা। মূলত তারাই এই আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে তারা যার যার অবস্থানে চলে যায় এবং হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের রেখে যায় বিপদের মাঝখানে। বি.এন.পি এবং জামায়াতে ইসলামীর পরিকল্পনা ছিল সেদিন দেশে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর। যদি সেটাই তাদের উদ্দেশ্য না হত তাহলে তারা কিসের জোরে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় একটি নির্বাচিত সরকারকে। যাদের আছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কিভাবে বিদ্রোহ ঘোষনা করে। তাদের কিভাবে আল্টিমেটাম দেয়? বিষয়টি চিন্তার। এদিকে বাবুনগরীকে রিমান্ডে নেওয়ার পর তার স্বীকারোতক্তিতে জানা যায় সেদিন (৫ মে) বিকাল ৫টার পর হইতে তাদের হাতে সমাবেশের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। বাবুনগরীকে মন্ত্রী বানানোর লোভ দেখানো হয়েছিল। একটি চিন্তার বিষয় হচ্ছে হেফাজতে ইসলাম নবগঠিত সম্পূর্ণ নতুন আবির্ভাব হওয়া একটি দল। তাদেরএত লোকসমাগম হল কোত্থেকে? মূল কাহিনী হচ্ছে হেফাজতে ইসলামী দলটিকে ব্যাবহার করা হচ্ছে সাইনবোর্ড হিসেবে। আর কাজ করছেন বিশেষ একটি মহল। এই বিশেষ মহলের পরিকল্পনা ছিল ৬মে যেকোনো প্রকারে দেশে গণঅভ্যুত্থান গঠানোর। এরা সরকারকে বোকা ভেবেছিল আর নিজেদের ভেবেছিল বুদ্ধিমান। কিন্তু সরকার তাদের পরিকল্পনা ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছে। মিডিয়াতে এবং বহির্বিশ্বে গুজব রটানো হচ্ছে ৫মে রাতে হাজার হাজার হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনা যদি সত্যি হত আসলে আর কেউ চুপ থাকলেও হেফাজতে ইসলাম চুপ থাকতো না। তারা লাগাতার কর্মসূচীর ঘোষনা দিত। তাদের সেদিনের ঘটনা নিয়ে যতটুকু না হেফাজতে ইসলাম চিন্তিত তার চেয়ে বেশি চিন্তিত জামায়াতে ইসলাম। তারা বিভিন্ন মিডিয়াতে বিভিন্নভাবে মিথ্যাচার করেই যাচ্ছেন। রাস্তাঘাটে মানুষের সাথে ঝগড়া বাধাচ্ছেন। এখান থেকেই উপলব্ধি করা যায় আসলে সেদিন দেশে কি হতে যাচ্ছিল এবং কারা এর নেতৃত্বে ছিলেন। যারা এখনো মনে করে যে এদেশের মানুষ এখনো বোকা রয়ে গেছে আমি বলব তাদের চিন্তাধারার পরিবর্তন আনা উচিত। কারণ দেশের মানুষ আর আগের মত বোকা নাই। দেশের একেবারে সাধারণ নিম্নবিত্ত লোকেরাও এখন রাজনৈতিক চালচলন ভালভাবে বুঝে। সামনে এককথা পিছনে এককথা বাদ দিয়ে সত্যের রাজনীতিতে অভ্যাস করুন। কোন প্রমাণ ছাড়া বিশ্ব মিডিয়াতে দেশের নামে দুর্নাম রটানো থেকে বিরত থাকুন। এতে দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়তে পারে আমাদের দেশের সকল রপ্তানি খাতে। তখন দেশের অর্তনীতির অবস্থা আরো করুণ হয়ে যাবে। দেশে দুর্বিক্ষ নেমে আসার সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাই দেশের মানুষের কথা চিন্তা করুন। দেশের শান্তি বজজায় রাখুন। সাধারণ লোকের কাছে আপনাদের মত বাইরের সাহায্য নাই। তারা কেটে, দিনমজুরী করে, পরিশ্রম করে খেতে পছন্দ করে। অন্তত তাদের সুখে থাকতে দিন। এই বাংলার মাটিতে ১৯৫২ থেকে শুরু করে আজ অবধি শুধু রক্ত ঝড়েই যাচ্ছে, এই রক্তের খেলা বন্ধ করুন। আমরা আর রক্ত দেখতে চাই না।

No comments: