পৃষ্ঠাসমূহ

Monday, May 6, 2013

হেফাজতে ইসলাম ঢাকা ছাড়লেও তান্ডব ছাড়েনি।



হেফাজতে ইসলাম এভাবেই হেফাজত করছেন দেশের এবং ধর্মের
হেফাজতে ইসলাম হঠাৎ করে জেগে উঠা বাংলাদেশের একটি ইসলামী সংগঠনের নাম। তাদের আভির্ভাবের পর হতেই মূলত তাদের জঙ্গীবাদী কার্যক্রমে এখনো অবধি লিপ্ত আছেন। তাদের ভাষ্য মতে তারা যা করছেন তা হলো ইসলামের হেফাজতের জন্য এবং ইসলামের রক্ষার জন্য।
তারা তাদের আন্দোলন চলাকালীন সময়ে যে কারো দোকান, বাড়ী ঘর, ব্যাংক ইত্যাদি ভাংচুর এবং আগুন দিতে পারবে। এটি তাদের আন্দোলনের অংশ, ইসলামের হেফাজতের নমুনা। কিন্তু তাদের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ এবং দেশের আপামর জনগণের হস্তক্ষেপ তাদের মতে ইসলামের বিরোধীতা। এই হেফাজতে ইসলামের তান্তবে গতকাল ০৬/০৫/২০১৩ তারিখ প্রায় সারাদিনই সংঘর্ষ চলে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুরে ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে। এই দুই জায়গায় পুলিশ, বিজিবি সদস্যসহ বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এই নিহতদের মধ্যে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুরে দু’জন গার্মেন্টস শ্রমিকও ছিল। এরা কি অপরাধ করেছিল? কেন এই নিষ্পাপ, নিরপরাধ লোকগুলোর প্রাণ দিতে হল? ইসলাম কি মানুষ মারার শিক্ষা দেয়, ইসলাম কি নির্বিচারে ভাংচুর, নিরপরাধ নিরীহ লোকের দোকান পাট, বাড়ী-ঘর জালিয়ে দেওয়ার শিক্ষা দেয়? আর দেশে শুধুমাত্র ইসলাম সম্পর্কে ধারণা শুধু আপনারাই রাখেন? দেশে যারা হেফাজতে ইসলাম কিংবা জামায়াতে ইসলামের অনুসারী তারাই কি শুধু মুসলমান? বাকীরা সবাই কি নাস্তিক? এটাই যদি হয়- তাহলে হেফাজতে ইসলাম নামটা তাড়াতাড়ি মুছে ফেলুন। কেনণা- আপনার ইসলামের হেফাজত নয়- ইসলামকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। আপনারা সরাসরি পাকিস্তানি এজেন্ট। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য শুরু হয়েছে এবং রায় ঘোষনাও শুরু হয়েছে। যখন আস্তে আস্তে সব যুদ্ধাপরাধীর গোমর ফাঁস হচ্ছে তখন পাকিস্তানের মাথা নড়ে উঠেছে। তারা বাংলা মাটিতে আবার তাদের বীজ রোপন করেছে। তারা সেই ১৯৭১ এ আবার ফিরিয়ে নেওয়ার জন্যই এই পায়তারা। হেফাজতে ইসলামের তান্ডবে দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য নিহত হল। তাদের জন্য আমাদের প্রধান বিরোধী দলেরও কোন রকম আফসোস নেই বরং তারা খুশিই হয়েছেন। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন উগ্রবাদী জঙ্গী নিহত হয়েছে তো প্রধান বিরোধী দলের চিন্তায় ধরেছে। তাদের শোকে বিরোধী দলের নেতাদের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে। তাই তারা ৮ ও ৯ মে সারাদেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল এর কর্মসূচী দিয়েছে। সরকারী তহবিল থেকে অনেক টাকা খরচ করে একটি পুলিশ কনস্টেবল তৈরী করতে হয় দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এবং একজন বি.জি.বির সদস্য তৈরী করতে আরো বেশি টাকা খরচ করতে হয় এবং এই বিজিবি সদস্যরা দেশ্ রক্ষা এবং দেশের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন। এই বীর সৈনিকদের প্রাণ গেলে আমাদের দেশের বিরোধীদলগুলোর কোন নড়চড় দেখা যায় না। কিন্তু দলীয় কোন কর্ম গুলিবিদ্ধ হলেই পরেরদিন হরতাল এবং ঐ হরতালে বাঁধা আসলে আবারো হরতাল। এভাবেই আমাদের দেশ এখনো অনুন্নত রয়ে গেছ। দেশের ক্ষমতা লোভীরা এ দেশটাকে উন্নয়নের মুখ দেখতে দিচ্ছেন না। সরকারকে আরো কঠোর হওয়া উচিৎ। দেশে যখনই কোন রকম ধ্বংসযজ্ঞের পরিকল্পনা করা তখনই পুলিশ, বিজিবি যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে তাদের গুলির আদেশ দেওয়া উচিৎ। এ রকম কয়েকবার হুকুম দিলে এবং তা বাস্তবায়ন করলে দেশে এ ধরনে নৈরাজ্য কিংবা অরাজকতা সৃষ্টির পূর্বে যে কেউ একবার তার প্রাণ বাঁচানোর চিন্তা অবশ্যই করবেন। দেখবেন তখন আর এদেশে এরকম অরাজকতা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। সংবিধানে আইন পাশ করা উচিৎ দেশে যে কোন নেতা সর্বোচ্ছ দুইবার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবে। কোন অবস্থাতেই তার বেশী নয়। এতে করে দেশে নতুন নেতৃত্ব আসবে। আসবে নতুন নতুন সব ধারণা। পাল্টে যাবে দেশের চেহারা। বদলাবে দেশের হাল। উন্নয়নশীল থেকে তখন এ দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে জানবে বিশ্ব। তাই আমরা সবাই দেশে নতুন নেতৃত্ব চায়। একজন দীর্ঘদিন তার নিজের হাতে ক্ষমতা রেখে দিলে তার উত্তরসূরীরা কেউ ক্ষমতা পাবে না এবং চিন্তা চেতনাও বদলাবে না। আর ধর্ম নিয়ে যারা দেশে ছিনিমিনি খেলছেন তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমাদের দেশে প্রায় সব ধর্মের মানুষ আছে। আজ আমরা হিন্দুদের কিংবা মুসলিম হয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপর অর্থাৎ সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ করলে মনে করতে হবে আমরা ইসলামের উপর আঘাত আনছি। কেননা এই দেশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট, কিন্ত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, মায়ানমারে মুসলমানরা সংখ্যালঘু। আমরা এদিকে হামলা করলে আমাদের প্রতিবেশী মুসলিম ভাইদের উপর চলবে চরম নির্যাতন। সুতরাং বন্ধ করুন এসব ভন্ডামি।


No comments: