পৃষ্ঠাসমূহ

Saturday, May 4, 2013

দেশে কিসের আন্দোলন হচ্ছে আর কিসের আন্দোলন হওয়া উচিত।



বাংলাদেশে ইদানিং বেশ আলোচিত এই হেফাজতে ইসলাম। তারা ইসলাম রক্ষায় বেশ ভূমিকা পালন করছে। তাদের চলমান আন্দোলন নাস্তিক ব্লগারের বিরুদ্ধে, তাদের আন্দো্লন সরকার পতনের আন্দোলন, তাদের আন্দোলন নারীদের কর্মবিমুখ করার জন্যা ইত্যাদি। এখানে একটি জায়গায় আমি খুব চিন্তিত।
নারী বিষয়ে তারা যে ভূমিকা নিয়েছেন কিংবা পালন করছেন তা আমাদের মত দরিদ্র দেশের জন্য কতটুকু কার্যকর। আর এ দেশের প্রতিটি নারীই তো আর মুসলিম না। প্রতিটি নারী পর্দা করবে এমন তো কথা নেই। যারা অন্য ধর্মের আছে তাদের হাজার বার বললেও পর্দা করবে না। বাংলাদেশের রপ্তানী খাতে প্রধান ভূমিক পালন করছে গার্মেন্টস শিল্প। আর এই গার্মেন্টস এর বেশিরভাগই কিন্তু চলে নারী শ্রমিকদের অবদানে। এতে করে গার্মেন্টস মালিকরাও যতেষ্ট পরিমাণে শ্রমিক পাচ্ছে এবং নারীদেরও হচ্ছে কর্মসংস্থান। এতে করে অনেক নারীরা স্বাবলম্বীও হতে শিখেছে। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই হেফাজতী আন্দোলন যদি এই নারীদের কর্ম বিমুখ করে দেয় তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান যে অর্থনীতি, সেই অর্থনীতিতে আরো কঠিন থেকে কঠিনতরভাবে প্রভাব ফেলবে। অনেক পরিবার হয়ে যাবে অচল। বাংলাদেশ আবার ফিরে যাবে দরীদ্র সীমার নিচে। তখন হয়তো অনেক শ্রমিকের ছেলে মেয়েরা অনাহারে অর্ধাহারে হয়ে যাবে দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী। কেননা, কথায় আছে অভাবে স্বভাব নষ্ট। তাই হেফাজতে ইসলামের প্রতি বিনীত অনুরোধ থাকবে যে নারীদের দ্বারা তাদের সংসার চলে, যে নারীরা এখনো আঁকড়ে ধরে আছে তাদের ভঙ্গুর পরিবার তাদের যেন কোন প্রকার ক্ষতি না হয় আপনাদের চলমান আন্দোলনে। আপনারা আন্দোলন করেন, এটি আপনাদের সাংবিধানিক অধিকার। ইসলামের জন্য আন্দোলনে আমিও শরীক হব। তবে প্রকৃতপক্ষে সেইটা ইসলামের জন্য আন্দোলন হতে হবে। ইসলামকে ব্যবহার করে যেন রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চিন্তা না থাকে। এই আন্দোলন যদি হয় কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য তাহলে সেটা হয়তো ভয়ংকর হবে। অনেক ভয়ংকর। কারণ রাজনীতি অনেক খারাপ জিনিস বর্তমান যুগে আমাদের দেশের জন্য। এই হিংসাত্মক রাজনীতি আমাদের পরিহার করতে হবে। নারী বিরোধী আন্দোলন যদি হয় সেটা হওয়া উচিত দেশের দুই প্রধান নেত্রীর বিরুদ্ধে। কেননা আমরা আর নারী নেতৃত্ব চাই না। দেশে যতক্ষণ নারী নেতৃত্ব থাকবে ততক্ষণ চুলাচুলি, ঘেষাঘেষি লেগেই থাকবে। কারণ যাদের কাজ সংসার পরিচালনা করা তাদের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় তখন তারা নিজেকে পুরো দেশটার মালিক মনে করে বসে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে খারাপ দিক। আমাদের দেশের দু্ই প্রধান নেত্রীর এমন সব আচরণ আমরা দেখেছি যে, কোন একজায়গা কোন ঘটনা হলো, ঘটনাটি কেন হয়েছে তা তদন্ত করার আগেই তাহারা মন্তব্য করে বসেন যে এটি বিরোধী দলের কারসাজি কিংবা বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র। এরকম চলতে থাকলে এই দেশের কখনোই উন্নতি আশা করা যায় না। আমাদের এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয় আজ অনেক বছর পার হয়ে গেল। কিন্তু উন্নতির ছোয়া সেভাবে লাগেনি যেভাবে লাগার কথা ছিল। কিন্তু তারপরও আমাদের দেশের ক্ষমতাসীন দলের প্রধানরা সবসময় বলে বেড়ান দেশ উন্নয়নের জোয়াড়ে ভাসছে। তাহারা নিজেদের গুণ নিজেরাই গেয়ে বেড়ান। দেশের জনগণের ভাষ্য কি তা জানার প্রয়োজন মনে করেন না। আমি আবার এটি বলতে চাচ্ছি না যে, আওয়ামীলীগ কিংবা বি.এন.পি. থাকবে না। তারা থাকবে। কিন্তু তাদের নেতৃত্বের পরিবর্তন আনতে হবে। যতক্ষণ নেতৃত্বের পরিবর্তন আসবে না ততক্ষণ এদেশের উন্নয়নের পরি্বর্তন হবে না। তাই এ দেশের স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে যদি আন্দোলন করতে হয়, তাতে আমিও সামিল হব এবং দেশের জনগণের প্রতিও আমার অনুরোধ থাকবে আপনারাও সামিল হোন আন্দোলনে। এ আন্দোলন হবে নেতৃত্ব পরিবর্তনের আন্দোলন, এ আন্দোলন হবে দেশ রক্ষার আন্দোলন, এ আন্দোলন হবে দেশের উন্নয়নের জন্য আন্দোলন।

No comments: